Dhaka , Tuesday, 11 February 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
পরিবেশবান্ধব ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে গ্রাজুয়েটদের প্রতি আইইউবিএটি সমাবর্তনে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পাইকগাছা থানার এএসআই আলতাফ মাহমুদ চতুর্থ বারের মতো জেলা শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা নির্বাচিত বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ৬টি অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন স্থলবন্দর প্রাথমিকভাবে বন্ধের সুপারিশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে- মির্জা আলমগীর ৫৩ তম জাতীয় শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা কক্সবাজার জেলা পর্যায় অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জে গার্মেন্টস কর্মীকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে আটক দুই রামগঞ্জে অগ্নি নির্বাপণ মহড়া অনুষ্ঠিত  পাইকগাছায় কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত  মোহাম্মদ আবুল কাসেম সওদাগর আর নেই সরাইল উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে অবৈধ ইটের ভাটা বন্ধ রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অত্যাধুনিক আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিনের উদ্ধোধন মণিরামপুরে ঘরে গৃহবধূর লাশ, শ্বশুর উধাও সদরপুরে ২ মণ জাটকা ইলিশ জব্দ ব্যবসায়ীকে জরিমানা  কাউখালীতে আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার  পলাশে জাতীয় নাগরিক কমিটির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নোয়াখালীতে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জ মোস্তফা ই-সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসার এডহক কমিটির সভাপতি হলেন রনি ভূইয়া টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন কক্সবাজার এর আহবায়ক কমিটি গঠিত পটিয়ায় প্রতিবেশীই যখন শিশু আয়াতের অপহরণকারী সরাইল উপজেলা প্রশাসনের প্রশংসনীয় উদ্যোগ নোয়াখালীর কবিরহাটে তাফসীরুল কুরআন মাহফিল সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সাবেক এমপি চয়ন ইসলাম গাজীপুরে গ্রেফতার  রামুতে মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করায় ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেলো এক ব্যক্তির মৎস্যজীবী লীগের সহ সভাপতি শরিফুজ্জামান ও তার স্ত্রী’র মিথ্যা মামলায় নিরুপায় হয়ে সংবাদ সম্মেলন করলেন ভুক্তভোগী রাশিদা আক্তার রূপগঞ্জে সরকারি রাস্তা দখল করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ লালাবাজারে জিয়াউর রহমান ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ সরাইলে জয়দধর কান্দিগ্রামে দুই ভূয়া পুলিশসহ গ্রেপ্তার ৮ গাজীপুরে সাদপন্থিরা  ইজতেমা ময়দান বুঝে নিলেন হাওর রক্ষায় কীটনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারীদের আইনের আওতায় আনা ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’এর লক্ষ্য- স্বরাষ্ট্র সচিব

প্রতিষ্ঠার ৭৪ বছরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 11:10:25 am, Sunday, 1 December 2024
  • 54 বার পড়া হয়েছে

প্রতিষ্ঠার ৭৪ বছরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।।

মোঃ রুবেল খান 
মোংলা বাগেরহাট।।
   
  
আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হলো দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতির অন্যতম লাইফলাইন মোংলা সমুদ্র বন্দরের ৭৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৫০ সালের ১লা ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এ বন্দর। প্রতিষ্ঠার ৭৩ বছর পেরিয়ে ৭৪ বছরে পদার্পণ করল বন্দরটি। দীর্ঘ সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও বন্দরটি দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
রবিবার -১ ডিসেম্বর- সকাল সাড়ে ৯টায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের আয়োজনে বন্দরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে বন্দরের সদর দপ্তর হতে বন্দরের জেটি ফটক পর্যন্ত র‌্যালির আয়োজন করা হয়। পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান শান্তির প্রতীক কবুতর ও বেলুন উড়িযে দিবসের শুভ উদযাপন শুরু করেন। এর আগে ৭৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন উপলক্ষে রাত ১২:০১ মিনিটে বন্দরে অবস্থানরত দেশী, বিদেশী সকল জাহাজে এক মিনিট বিরতিহীন হুইসেল বাজানো হয়। 
পরে বন্দরের সেরা কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ বন্দরের সকল বিভাগ হতে ৩২ জন কর্মকরতা কর্মচারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়াও মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী হিসেবে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান এবং ০২-১২-২০২৩ হতে ০১-১২-২০২৪ তারিখ পর্যন্ত মবক’র পি- আর- এল ভোগরত কর্মকর্তা- কর্মচারীদের বিদায় সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মোংলা বন্দরের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কিবরিয়া হক- সদস্য -হারবার ও মেরিন- কাজী আবেদ হোসেন- সদস্য -অর্থ- যুগ্মসচিব- ড. এ. কে. এম. আনিসুর রহমান- সদস্য -প্রকৌশল ও উন্নয়ন-যুগ্মসচিব-কালাচাঁদ সিংহ (যুগ্মসচিব-পরিচালক -বোর্ড- মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক -জনসংযোগ- মো. মাকরুজ্জামান- সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: মনিরুল ইসলাম- মোঃ নুরুজ্জামান -উপসচিব-পরিচালক -প্রশাসন- সহ বন্দরের বিভাগীয় প্রধানগন ও বন্দরের সকল স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী এবং বন্দর ব্যবহারকারীগণ।শেষে মোংলা বন্দরের অগ্রগতি কামনায় দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বন্দর জানায়- বন্দর চ্যানেলে বিদেশি জাহাজ চলাচলে সুবিধার জন্য ৬৯টি নেভিগেশন বয়া স্থাপন করা হয়েছে। জেটি- মুরিং বয়া এবং এ্যাংকোরেজ-এ একই সাথে ৪৭ টি জাহাজ নোঙ্গরের সুবিধা রয়েছে এ বন্দরে। এছাড়াও আমদানি-রপ্তানিকারকদের জন্য ট্রানজিট শেড- ওয়্যার হাউজ- কন্টেইনার ইয়ার্ড- হিমায়িত খাদ্য সংরক্ষণের জন্য ১৬১ টি রিফার প্লাগপয়েন্ট, কার পার্কিং ইয়ার্ড, ১৩৬ টি আধুনিক হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি, টাগবোটসহ ৩২ টি সহায়ক জলযানের সুবিধা বিদ্যমান। মোংলা বন্দরে বর্তমানে ৪টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। পশুর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরে জেটি পর্যন্ত ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং এর সুবিধা সৃষ্টি হবে। মোংলা বন্দরের আধুনিক বর্জ্য ও নিসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরে আগত সমুদ্রগামী জাহাজের বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল দূষণ থেকে বন্দর চ্যানেল এবং সুন্দরবন রক্ষা পাবে। মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ, নিরাপদ চ্যানেল বিনির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সমুদ্রগামী জাহাজ সুষ্ঠুভাবে হ্যান্ডলিং এবং দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জরুরি উদ্ধার কার্য পরিচালনা করা সম্ভব হবে। 
আপগ্রেডেশন অফ মোংলা পোর্ট প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক ১.৫০ কোটি টন কার্গো, ৪.০০ লক্ষ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে। এতে করে বন্দরের কার্যক্রমের সাথে সংযুক্ত সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্ট, সিএন্ডএফ এজেন্ট, স্টিভেডরিং এবং শ্রমিক শ্রেণির জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়াও মোংলা বন্দরে ০২ টি অসম্পূর্ণ জেটি নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক ২ লক্ষ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। মোংলা বন্দরের উন্নয়ন ও ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপের ফলে ২০০৮-২০০৯ অর্থবছর থেকে মোংলা বন্দরের কার্যক্ষমতা ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের তুলনায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ আগমনের ক্ষেত্রে ২.৩০%, কার্গো ৯.৭২%, কন্টেইনার ১৬.৭৮% এবং গাড়ির ক্ষেত্রে ১৩% প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
বর্তমান অর্থ বছরের প্রথম ০৪ -চার- মাসে ২৯ লক্ষ মে. টন পন্য আমদানি রপ্তানি হয়েছে। এছাড়াও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ফলে প্রথমবারের মতো প্রতি ঘন্টায় ২৪ টিরও বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে এবং জেটির সম্মুখে নিয়মিত ড্রেজিং এর ফলে নাব্যতা বিরাজমান থাকার কারণে ০৫ টি জেটিতে একই সাথে ০৫ টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত- নেপাল আর ভুটানের ট্রানজিট পণ্য মোংলা বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানির সুসম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। মোংলা বন্দর ব্যবহার করে স্থল- নৌ আর রেলপথের মাধ্যমে রাজশাহী-রংপুর ও বরিশাল বিভাগের পণ্য পরিবহনকে দ্রুততর ও সহজ করবে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ এ বন্দরটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বর্তমানে খাদ্যশস্য- সিমেন্ট ক্লিংকার- সার- মোটর গাড়ী- মেশিনারিজ- চাল- গম- কয়লা-তেল- পাথর- ভুট্টা- তেলবীজ- এলপিজি গ্যাস আমদানি এবং সাদামাছ- চিংড়ি- পাট ও পাটজাত দ্রব্য- হিমায়িত খাদ্য- কাকড়া- ক্লে টাইলস- রেশমী কাপড় ও জেনারেল কার্গো রপ্তানির মাধ্যমে দেশের চলমান অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে।
উল্লেখ্য- ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর চালনা বন্দর নামে মোংলায় যাত্রা শুরু করে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর। ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর বন্দরটি বিদেশি জাহাজ নোঙরের জন্য উন্মুক্ত করা হলে ব্রিটিশ বণিক জাহাজ ‘দি সিটি অব লিয়ন্স’ বন্দরে প্রথম নোঙ্গর করে। সমুদ্রগামী জাহাজ নোঙরের ক্ষেত্রে মোংলা অধিকতর সুবিধাজনক হওয়ায় ১৯৫৪ সালে বন্দরটি চালনা থেকে মোংলায় স্থানান্তর করা হয়। তখন মোংলা বন্দর দীর্ঘদিন ধরে চালনা নামেই পরিচিত ছিল। প্রতিষ্ঠার পর এটি প্রথমে চালনা অ্যাঙ্কর, পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে চালনা পোর্ট কর্তৃপক্ষ এবং সর্বশেষ ১৯৮৬ সাল থেকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ হিসেবে যাত্রা শুরু করে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

পরিবেশবান্ধব ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে গ্রাজুয়েটদের প্রতি আইইউবিএটি সমাবর্তনে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

প্রতিষ্ঠার ৭৪ বছরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।।

আপডেট সময় : 11:10:25 am, Sunday, 1 December 2024
মোঃ রুবেল খান 
মোংলা বাগেরহাট।।
   
  
আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হলো দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতির অন্যতম লাইফলাইন মোংলা সমুদ্র বন্দরের ৭৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৫০ সালের ১লা ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এ বন্দর। প্রতিষ্ঠার ৭৩ বছর পেরিয়ে ৭৪ বছরে পদার্পণ করল বন্দরটি। দীর্ঘ সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও বন্দরটি দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
রবিবার -১ ডিসেম্বর- সকাল সাড়ে ৯টায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের আয়োজনে বন্দরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে বন্দরের সদর দপ্তর হতে বন্দরের জেটি ফটক পর্যন্ত র‌্যালির আয়োজন করা হয়। পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান শান্তির প্রতীক কবুতর ও বেলুন উড়িযে দিবসের শুভ উদযাপন শুরু করেন। এর আগে ৭৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন উপলক্ষে রাত ১২:০১ মিনিটে বন্দরে অবস্থানরত দেশী, বিদেশী সকল জাহাজে এক মিনিট বিরতিহীন হুইসেল বাজানো হয়। 
পরে বন্দরের সেরা কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ বন্দরের সকল বিভাগ হতে ৩২ জন কর্মকরতা কর্মচারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়াও মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী হিসেবে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান এবং ০২-১২-২০২৩ হতে ০১-১২-২০২৪ তারিখ পর্যন্ত মবক’র পি- আর- এল ভোগরত কর্মকর্তা- কর্মচারীদের বিদায় সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মোংলা বন্দরের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কিবরিয়া হক- সদস্য -হারবার ও মেরিন- কাজী আবেদ হোসেন- সদস্য -অর্থ- যুগ্মসচিব- ড. এ. কে. এম. আনিসুর রহমান- সদস্য -প্রকৌশল ও উন্নয়ন-যুগ্মসচিব-কালাচাঁদ সিংহ (যুগ্মসচিব-পরিচালক -বোর্ড- মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক -জনসংযোগ- মো. মাকরুজ্জামান- সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: মনিরুল ইসলাম- মোঃ নুরুজ্জামান -উপসচিব-পরিচালক -প্রশাসন- সহ বন্দরের বিভাগীয় প্রধানগন ও বন্দরের সকল স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী এবং বন্দর ব্যবহারকারীগণ।শেষে মোংলা বন্দরের অগ্রগতি কামনায় দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বন্দর জানায়- বন্দর চ্যানেলে বিদেশি জাহাজ চলাচলে সুবিধার জন্য ৬৯টি নেভিগেশন বয়া স্থাপন করা হয়েছে। জেটি- মুরিং বয়া এবং এ্যাংকোরেজ-এ একই সাথে ৪৭ টি জাহাজ নোঙ্গরের সুবিধা রয়েছে এ বন্দরে। এছাড়াও আমদানি-রপ্তানিকারকদের জন্য ট্রানজিট শেড- ওয়্যার হাউজ- কন্টেইনার ইয়ার্ড- হিমায়িত খাদ্য সংরক্ষণের জন্য ১৬১ টি রিফার প্লাগপয়েন্ট, কার পার্কিং ইয়ার্ড, ১৩৬ টি আধুনিক হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি, টাগবোটসহ ৩২ টি সহায়ক জলযানের সুবিধা বিদ্যমান। মোংলা বন্দরে বর্তমানে ৪টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। পশুর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরে জেটি পর্যন্ত ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং এর সুবিধা সৃষ্টি হবে। মোংলা বন্দরের আধুনিক বর্জ্য ও নিসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরে আগত সমুদ্রগামী জাহাজের বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল দূষণ থেকে বন্দর চ্যানেল এবং সুন্দরবন রক্ষা পাবে। মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ, নিরাপদ চ্যানেল বিনির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সমুদ্রগামী জাহাজ সুষ্ঠুভাবে হ্যান্ডলিং এবং দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জরুরি উদ্ধার কার্য পরিচালনা করা সম্ভব হবে। 
আপগ্রেডেশন অফ মোংলা পোর্ট প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক ১.৫০ কোটি টন কার্গো, ৪.০০ লক্ষ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে। এতে করে বন্দরের কার্যক্রমের সাথে সংযুক্ত সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্ট, সিএন্ডএফ এজেন্ট, স্টিভেডরিং এবং শ্রমিক শ্রেণির জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়াও মোংলা বন্দরে ০২ টি অসম্পূর্ণ জেটি নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক ২ লক্ষ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। মোংলা বন্দরের উন্নয়ন ও ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপের ফলে ২০০৮-২০০৯ অর্থবছর থেকে মোংলা বন্দরের কার্যক্ষমতা ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের তুলনায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ আগমনের ক্ষেত্রে ২.৩০%, কার্গো ৯.৭২%, কন্টেইনার ১৬.৭৮% এবং গাড়ির ক্ষেত্রে ১৩% প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
বর্তমান অর্থ বছরের প্রথম ০৪ -চার- মাসে ২৯ লক্ষ মে. টন পন্য আমদানি রপ্তানি হয়েছে। এছাড়াও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ফলে প্রথমবারের মতো প্রতি ঘন্টায় ২৪ টিরও বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে এবং জেটির সম্মুখে নিয়মিত ড্রেজিং এর ফলে নাব্যতা বিরাজমান থাকার কারণে ০৫ টি জেটিতে একই সাথে ০৫ টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত- নেপাল আর ভুটানের ট্রানজিট পণ্য মোংলা বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানির সুসম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। মোংলা বন্দর ব্যবহার করে স্থল- নৌ আর রেলপথের মাধ্যমে রাজশাহী-রংপুর ও বরিশাল বিভাগের পণ্য পরিবহনকে দ্রুততর ও সহজ করবে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ এ বন্দরটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বর্তমানে খাদ্যশস্য- সিমেন্ট ক্লিংকার- সার- মোটর গাড়ী- মেশিনারিজ- চাল- গম- কয়লা-তেল- পাথর- ভুট্টা- তেলবীজ- এলপিজি গ্যাস আমদানি এবং সাদামাছ- চিংড়ি- পাট ও পাটজাত দ্রব্য- হিমায়িত খাদ্য- কাকড়া- ক্লে টাইলস- রেশমী কাপড় ও জেনারেল কার্গো রপ্তানির মাধ্যমে দেশের চলমান অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে।
উল্লেখ্য- ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর চালনা বন্দর নামে মোংলায় যাত্রা শুরু করে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর। ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর বন্দরটি বিদেশি জাহাজ নোঙরের জন্য উন্মুক্ত করা হলে ব্রিটিশ বণিক জাহাজ ‘দি সিটি অব লিয়ন্স’ বন্দরে প্রথম নোঙ্গর করে। সমুদ্রগামী জাহাজ নোঙরের ক্ষেত্রে মোংলা অধিকতর সুবিধাজনক হওয়ায় ১৯৫৪ সালে বন্দরটি চালনা থেকে মোংলায় স্থানান্তর করা হয়। তখন মোংলা বন্দর দীর্ঘদিন ধরে চালনা নামেই পরিচিত ছিল। প্রতিষ্ঠার পর এটি প্রথমে চালনা অ্যাঙ্কর, পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে চালনা পোর্ট কর্তৃপক্ষ এবং সর্বশেষ ১৯৮৬ সাল থেকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ হিসেবে যাত্রা শুরু করে।