
শাহিন ফকির
পিরোজপুর সদর হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন -দুদক-। সোমবার -২৭ জানুয়ারি- দুপুরে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুদক পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে জানা যায়- আজ সকালে নিজেদের পরিচয় গোপন করে জেলা সদর হাসপাতালে চলমান অভিযান পরিচালনা করে দুদক। এ সময় সরকারি কাজে বাধা প্রদান করার অভিযোগে রাজিব মন্ডল -২২- ও রাহাত রব্বানী -২৪- নামে দুই দালালকে আটক করা হয়। পরে দুদকের পাঁচ সদস্যের একটি দল হাসপাতালের রান্নার জায়গা, বিভিন্ন বিভাগ, ওষুধের স্টোর রুমে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় খাবারের পরিমাণ এবং ওষুধ মজুদে গরমিল পায় দুদক। দেখা যায়, খাবারে প্রতিদিন ১০০ জনকে জনপ্রতি ৬০ গ্রাম করে মাংস দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে ৫০ গ্রাম করে দেওয়া হয় এবং নিম্নমানের চাল সরবরাহ করা হয়। শিশু বিভাগের ওষুধ সরবরাহ রেজিস্টারে কডসন -১০০ মিলিগ্রাম- নামের ৪০০ পিস ওষুধ এবং ট্রাইজেট -২৫০ মিলিগ্রাম- নামের ৩ হাজার ৭২৭ পিস ওষুধ থাকার কথা থাকলেও সেখানে কোনো ওষুধ পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালে ওষুধ ও অন্যান্য মালামাল সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাউথ বাংলা কর্পোরেশন ওষুধ ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতে না পারায় ১ কোটি ৭৬ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকার একটি চেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রদান করলেও হাসপাতালের নথিপত্রে ওষুধের সঠিক সরবরাহ দেখানো হয়। অভিযান শেষে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দুই দালালকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড, একইসঙ্গে ১০০ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন পিরোজপুরের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর -এনডিসি- ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াজ মাহমুদ।
দণ্ডপ্রাপ্ত রাজিব মন্ডল পিরোজপুর সদর উপজেলার উত্তর শোরগোলা গ্রামের রবিন মন্ডলের ছেলে এবং রাহাত রব্বানী সদর উপজেলার খামকাটা গ্রামের আজাদ রব্বানীর ছেলে।
সার্বিক বিষয়ে দুদক পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন,সাংবাদিকদের জানান,পিরোজপুর সদর হাসপাতালে আমাদের চলমান অভিযানে দুই দালালকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অভিযানে হাসপাতালে নিম্নমানের খাবার, ওষুধ এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতে ১ কোটি ৭৬ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকার একটি গরমিল পাওয়া যায়। এ বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে পিরোজপুরের সিভিল সার্জন মো. মিজানুর রহমান বলেন – বিষয়টি গত অর্থবছরের ছিল, তখন আমি ছিলাম না। তবে একটি কমিটি গঠন করে তদন্ত করে দেখা হবে।