
নেত্রকোণা প্রতিনিধি।।
একই পরিবারে রয়েছে চার জন বাক প্রতিবন্ধী। কিন্তু কারো নেই কোন প্রতিবন্ধী কার্ড। স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের কাছে ধড়না দিয়েও মিলছে না ফল। যার ফলে তারা বঞ্চিত হচ্ছে সরকারি সাহায্য সহযোগীতা থেকে। প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য সরকারি দপ্তরে গেলে হাতে তুলে দেওয়া হয় হাজারো নিয়মের তালিকা। এই নিয়মের মধ্যেই আটকা পড়ে যায় তাদের প্রতিবন্ধী কার্ড। উপজলো সমাজ সেবা কার্যালয়ের মাঠকর্মী বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিবন্ধী সনাক্ত করলেও অজ্ঞাত কারনে বাদ পরে যায় একই পরিবারের চার বাক প্রতিবন্ধী দিদারুল ( ১৬) মোরসালিন(৫) লকি আক্তার (১০) স্বর্ণা মনি (১৫)। ফলে চার প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন নেত্রকোনার মদনের তিয়শ্রী ইউনিয়নের কৃষ্টপ্রু গ্রামের দিন মজুর আবুল মিয়া।
সমাজ সেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সাল থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের মাটকর্মীরা প্রতিবন্ধী সনাক্ত করণ জরিপ করেন। যার তদারকি করেন উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার। এ ছাড়াও প্রতিবন্ধী কার্ড পেতে হলে উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে প্রতিবন্ধী সনাক্তকরণ জরিপ ফরমে আবেদন করতে হয়। পরবর্তীতে ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে সনাক্ত করা হয় প্রতিবন্ধীর ধরন। এ সকল প্রক্রিয়া শেষে দেওয়া হয় প্রতিবন্ধী কার্ড।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গেলে আবুল মিয়া জানান, আমার চার প্রতিবন্ধী সন্তানের কার্ড করার জন্য মদন সমাজ সেবা কার্যালয়ে গেলে একটি আবেদন ফরম দিয়ে আমাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠায়। ডাক্তারের কাছে গেলে তারা আমাকে চেয়ারম্যানের প্রত্যায়ন নিয়ে যেতে বলে। পরবর্তীতে চেয়ারম্যানের প্রত্যায়ন নিয়ে গেলে বড় ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা করতে বলে। আমি গরিব মানুষ বড় ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করার টাকা আমার নেই। কার্ডের জন্য চেয়ারম্যান মেম্বারদের কাছেও অনেক ঘুরাঘুরি করেছি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন শামিম জানান, আবুল মিয়ার চার প্রতিবন্ধী সন্তানের কোন কার্ড এখন পর্যন্ত হয়নি। তাদের কার্ডের জন্য সমাজ সেবা অফিসে যোগাযোগ করছি। সমাজ সেবার মাঠকর্মীরা বাড়ি বাড়ি না গিয়ে পরিষদে বসে মিটিংয়ের মাধ্যমেই দায়িত্ব শেষ করে।
তিয়শ্রী ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান জানান, আবুল মিয়ার চার সন্তানের মধ্যে দুই জনকে আমি প্রত্যায়ন দিয়েছি। বাকি দুই জনের ডাক্তারি সনদ নিয়ে আসলে প্রত্যায়ন দিয়ে দিব।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, চেয়ারম্যানের প্রত্যায়ন নিয়ে আসলে তাদের প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা শাহ্ জামান আহাম্মেদ জানান, আবুল মিয়ার প্রতিবন্ধী সন্তানরা কি কারণে জরিপ থেকে বাদ পড়েছে বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। তবে চেয়ারম্যান প্রত্যায়ন দিলে আমি তাদের প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ কে এম লুৎফর রহমান জানান, একই পরিবারের চার জন বাক প্রতিবন্ধীর কার্ড না হওয়ার বিষয়টি দুঃখ জনক। আমি তাদের খোঁজ খবর নিয়ে কার্ডের ব্যবস্থা করে দিব।