আলী হোসেন রুবেল
স্টাফ রিপোর্টার ভোলা।।
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে চলছে মাছ শিকারের মহোউৎসব। প্রতিদিন শত শত জেলে দিন রাত আইন অমান্য করে মাছ ধরছে। এমনকি মৎস্যঘাট গুলো থেকে শুরু করে হাটবাজারে প্রকাশ্য চলছে রমরমা মাছের কেনা বেঁচা। তাবে জেলেরা বলছে, তাদের সরকারি যে বরাদ্দ চাল দেয়ার কথা ছিলো তাও সকলের ভাগ্যে জুটে না। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় তাই বাধ্য হয়ে জীবিকার প্রয়োজনে তাদের নদী নামতে হচ্ছে। তবে মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে নদীতে অভিযান চলছে বলে তারা জানিয়েছেন।
ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর তীরে গেলেই এখন দেখা যাবে শত শত নৌকা ও ট্রলার নদী থেকে মাছ শিকারে ব্যস্ত। দেখে বুঝতেই পারা যাবেনা যে নদীতে মাছ ধরার উপর সরকারি কোন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অথচ মাছের অভয়আশ্রম সৃষ্টির লক্ষে চলছে ২ মাসের জন্য সকল ধরনের মাছ ধরার উপর মৎস্য বিভাগের নিষেধাজ্ঞা। কিন্তুু মাছ ধরা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নেয়ায় এই নিষেধাজ্ঞা মানছে না ভোলার অধিকাংশ জেলে আড়ৎদারসহ
মৎস্যজীবীরা। জেলেরা সকাল বিকাল ও রাতে নদীতে মাছ শিকারের এখন ব্যস্ত সময় পার করছে। আর এসব মাছ জেলার ছোট বড় শতাধিক মৎস্য ঘাটে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু জেলেরা বলছে, তারা পেটের দায়ে বাধ্য হয়েই জেল জড়িমানা মাথায় নিয়ে নদীতে মাছ শিকারে যাচ্ছেন। কারন তাদের বিকল্প কোন কর্মসংস্থান নেই। তার উপর রয়েছে,বিভিন্ন এনজিও এবং সমিতির ঋনের সাপ্তাহিক কিস্তির টাকা দেয়ার চাপ। তাই বাধ্য হয়ে তারা নদীতে মাছ ধরতে যাচ্ছে। আবার অনেকইে কিস্তিদেয়ার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে অন্যত্র।
এদিকে উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলায় রয়েছে প্রায় দের লক্ষাধিক জেলে। তার মধ্যে সরকারি নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার। কিন্তুু ২ মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ কালিন সময়ের জন্য বরাদ্ধ এসেছে ৮৯৪১০জন পরিবারের জন্য। এতে গতবছরের ন্যায় এবার সকল জেলেদের ভাগ্যে সরকারি চাল জুটবে না। বরাদ্ধকৃত চাল কিছু কিছু ইউনিয়নে জেলেদের মাঝে দেয়া হলেও অধিকাংশ জেলেদের মাঝে এখনো দেয়া হয়নি।
সরেজমিনে ভোলার ইলিশা,রাজাপুর,ভোলার খাল,নাছির মাঝি,তুলাতুলি,দৌলতখানের মাঝির ঘাট,মুন্সির হাটের মৎস্যঘাটে দেখা যায়,সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলে আড়ৎদাররা হাক ডাক দিয়ে মাছ বিক্রি করছে। এমনকি ভোলর ৩৮টি বরফ কলেও চলছে রমরমা বিক্রি। কিন্তু আইনশৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এসব বরফ কল বন্ধে কঠোর কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি।
এদিকে মাছ ধরা বন্ধে ভোলা কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ নদীতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে বলে দাবী করেণ মৎস্য বিভাগ।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ ন, জেলদের পুনবাসনের চাল ইতো মধ্যে বরাদ্ধ করা হয়েছে। যারা এখনো চাল পায়নি তাদের মাঝে দ্রুত বিতরণ করা হবে। এছাড়া এনজিও’র ঋণের টাকা ২ মাস বন্ধ রাখার ব্যাপারে তারা উদ্দ্যোগ করেছেন বলে জানান।
তিনি আরো বলেন, ভোলা সদরের ইলিশা মেঘনা থেকে চরপিয়াল ও তেঁতুলিয়া নদীর ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালির চর রুস্তম পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার এলাকাকে মাছের অভয়াশ্রম হিসাবে ঘোষনা করে গেলো ১ মার্চ থেকে -৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস সকল ধরনের মাছ ও জাল ফেলা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য বিভাগ।