Dhaka , Friday, 6 December 2024
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার কক্সবাজার কার্যালয় উদ্বোধন।। জেলা পুলিশ পিরোজপুর কর্তৃক প্রত্যেক থানা ভিত্তিক মসজিদে জনসচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্টিত।। একুশে পাঠচক্র অনুষ্ঠিত।। আটঘরিয়ায় রাইচ মিল ও গভীর নলকুপের মিটার চুরির হিরিক বিকাশ নাম্বারে টাকা দিলে মিটার ফেরত।। পাইকগাছায় কম্পিউটার ভবন উদ্বোধন ও দুঃস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ।। পাইকগাছায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি আটক- ৪।। সুন্দরগঞ্জে রোটারি ক্লাব ঢাকা সিটি’র কম্বল বিতরণ।। সরাইল পরগণা বন্ধু ফোরামের শ্লোগান ক্ষুদার্তকে অন্ন দান।। নোয়াখালীতে শিক্ষকের বাড়িতে হামলা অগ্নিসংযোগ।। নোয়াখালীতে দ্যা হান্ড্রেড বল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট এর শুভ উদ্বোধন।। মেহেরপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।। রামগঞ্জে শান্তি ও সম্প্রতি র‌্যালী অনুষ্ঠিত।। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার এদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে  দিয়েছে – জামায়াতের  সেক্রেটারী জেনারেল।।  ডুবোচরে ধাক্কায় মাছধরার নৌকা উল্টে ২ জেলের মৃত্যু নিখোঁজ ২।। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস।। পাইকগাছায় কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত।। ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালো করেউ প্রথম টি-টুয়েন্টিতে বাংলাদেশের হার।। সরাইল থানা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে ৩৩০পিস ইয়াবাসহ ৩ জন গ্রাফতার।। সরাইল উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক সামাজিক সম্প্রীতি সভা অনুষ্ঠিত।। কালিয়াকৈরে বিএনপি কার্যালয় উদ্বোধন।। কালিয়াকৈরে চা বাগান বাজারে ইউসিবি ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন।। তিতাসে বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষ্য গণসংযোগ।।  গুলিতে রিজভীর মাথার খুলি উড়ে যায়,মায়ের অগোচরে যেত জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে।। মেহেরপুরে মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত।। লক্ষ্মীপুরে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারকে সহায়তা প্রদান।। বিতারিত প্রধান শিক্ষক ফিরে আসার পাঁয়তারা প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন।। জেলা প্রশাসকের সাথে পাইকগাছা উপজেলা কর্মকর্তাদের মতবিনিময়।।  নোয়াখালীর ডুবোচরে ভেসে এলো বিশালাকৃতির তিমি।। চট্টগ্রামের স্বাধীনতা জিয়া পার্ক পার্কের করুন দশা।। পোকখালী নাইক্ষ্যংদিয়া ও চৌফলদন্ডী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিঃ এর নির্বাচন সম্পন্ন।।

দৈনিক সংবাদের সম্পাদক মনু মিয়ার ২১ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 09:10:36 am, Sunday, 24 November 2024
  • 16 বার পড়া হয়েছে

দৈনিক সংবাদের  সম্পাদক মনু মিয়ার ২১ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।।

অরবিন্দ রায়

স্টাফ রিপোর্টার।।

  

দৈনিক সংবাদের সম্পাদক আহমদুল কবির -মনু মিয়ার- ২১ তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ রবিবার পালিত হয়েছে।
দৈনিক সংবাদের  প্রধান সম্পাদক- গনতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি- সাবেক সংসদ সদস্য, দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব  আহমদুল কবিরের -মনু মিয়া- ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী পলাশের ঘোড়াশাল পালন করা হয়েছে।

মনু মিয়ার মৃত্য বার্ষিকী  উপলক্ষে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে তাঁর পরিবার  ও আহমদুল কবির -মনু মিয়া- স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
মনু মিয়া স্মৃতি সংসদ- বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ  ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কর্মসূচি সম্পর্কে আহমদুল কবির -মনু মিয়া- স্মৃতি সংসদ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, সকালে পবিত্র কুরআন খতম দিয়ে কার্যক্রম শুরু হবে।  পুষ্পস্তবক অর্পন- আলোচন সভা- বাদ জুম্মা অতিথি আপ্যায়ন ও কাঙালি ভোজ- এতিমখানায় খাবার বিতরণ, বাদ আছর এলাকার সকল মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

জানা যায়, আহমদুল কবির ছিলেন ব্রিটিশ- পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবাদিকতা অঙ্গনের এক প্রতিভাদীপ্ত ব্যক্তিত্ব। আপসহীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য পাকিস্তান আমল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি ছিলেন একজন ভিন্নমাত্রার রাজনীতিক। মূলত তার রাজনৈতিক দর্শন ছিল এদেশের সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করা। তদানীন্তন পাকিস্তানের রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক- গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল যে ধারা এদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিপুল জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক চেতনাকে নাড়া দিয়েছিল- সেই ধারার পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন আহমদুল কবির।

স্বাধীন বাংলাদেশে প্রগতিশীল- গণতান্ত্রিক- সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী রাজনীতির নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন আহমদুল কবির। দেশের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন আদর্শবান এবং নীতিনিষ্ঠ এক নেতা হিসেবে। তিনি সত্তরের দশকে গণতন্ত্রী পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুকালে তিনি পার্টির সভাপতি ছিলেন।

আহমদুল কবির ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর প্রথম ভিপি। ১৯৬৫ সালে আহমদুল কবির ন্যাপের প্রার্থী হিসেবে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন। সংবাদপত্রকে তিনি তার রাজনৈতিক আদর্শ প্রচার ও স্বকীয় প্রতিভা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেন। সাংবাদিকতায় তার অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল এবং বস্তুনিষ্ঠ চেতনার প্রতিরূপ হলো দৈনিক ‘সংবাদ’।

দৈনিক সংবাদে বস্তুনিষ্ঠ খবর ও মতামত প্রকাশের মধ্য দিয়ে তিনি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। আমৃত্যু তিনি এই আদর্শ লালন করে গেছেন। কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়নের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতির পদও অলঙ্কৃত করেছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। আহমদুল কবির দেশের একজন বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তাও ছিলেন। এদেশের শিল্প-বাণিজ্য প্রসারে তার ব্যাপক অবদান রয়েছে।
আহমদুল কবিরের -মনু মিয়া- বাবা মরহুম আবু ইউসুফ লুৎফুল কবির ছিলেন ঘোড়াশালের জমিদার। মায়ের নাম মরহুমা সুফিয়া খাতুন। তার জন্ম ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯২৩ ঘোড়াশালে। তিনি ২০০৩ সালের ২৪ নভেম্বর কলকাতার এপোলো গ্লেনইগল হাসপাতালে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে মারা যান।
অর্থনীতিতে সম্মানসহ বিএ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ১৯৪৫-৪৬ সালে ডাকসুর প্রথম সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও ১৯৪২-৪৩ সালে তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৫ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রার্থী হিসেবে তিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে নরসিংদী-২ -পলাশ-শিবপুর- নির্বাচনী এলাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৮৬ সালে নরসিংদী-২ -পলাশ- নির্বাচনী এলাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। আহমদুল কবির অর্থনীতিতে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করার পর রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ায় যোগদান করেন এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫০ সালে তিনি পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন এবং ১৯৫১ সালে গ্যাটে সম্মেলনে যোগদান করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি নিজের ব্যবসায় যোগদান করেন।

আহমদুল কবির তদানীন্তন পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি কৃষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। আশির দশকে তার নেতৃত্বে গণতন্ত্রী পার্টি গঠিত হয় এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি ছিলেন।
১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করেন। রোমে ফাও-এর কনফারেন্সে প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন। ইইসি দেশগুলোতে তিনি বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সরকার ‘সংবাদ’ অফিস পুড়িয়ে দেয় এবং আহমদুল কবিরকে গ্রেফতার করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ‘সংবাদ’ প্রকাশের জন্য অনেক প্রলোভন দেখায়, কিন্তু আহমদুল কবির পত্রিকা প্রকাশ করেননি। স্বাধীনতার পরপরই তিনি জেল থেকে মুক্তি লাভ করেন এবং সংবাদ পুনঃপ্রকাশ করেন।

আহমদুল কবির ১৯৫৪ সালে সংবাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে তিনি সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০১ সালে প্রধান সম্পাদক হন এবং আমৃত্যু এ দায়িত্ব পালন করে গেছেন। আহমদুল কবির স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে ও অসংখ্য আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও রাজনৈতিক অনুসারী রেখে গেছেন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার কক্সবাজার কার্যালয় উদ্বোধন।।

দৈনিক সংবাদের সম্পাদক মনু মিয়ার ২১ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।।

আপডেট সময় : 09:10:36 am, Sunday, 24 November 2024

অরবিন্দ রায়

স্টাফ রিপোর্টার।।

  

দৈনিক সংবাদের সম্পাদক আহমদুল কবির -মনু মিয়ার- ২১ তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ রবিবার পালিত হয়েছে।
দৈনিক সংবাদের  প্রধান সম্পাদক- গনতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি- সাবেক সংসদ সদস্য, দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব  আহমদুল কবিরের -মনু মিয়া- ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী পলাশের ঘোড়াশাল পালন করা হয়েছে।

মনু মিয়ার মৃত্য বার্ষিকী  উপলক্ষে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে তাঁর পরিবার  ও আহমদুল কবির -মনু মিয়া- স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
মনু মিয়া স্মৃতি সংসদ- বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ  ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কর্মসূচি সম্পর্কে আহমদুল কবির -মনু মিয়া- স্মৃতি সংসদ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, সকালে পবিত্র কুরআন খতম দিয়ে কার্যক্রম শুরু হবে।  পুষ্পস্তবক অর্পন- আলোচন সভা- বাদ জুম্মা অতিথি আপ্যায়ন ও কাঙালি ভোজ- এতিমখানায় খাবার বিতরণ, বাদ আছর এলাকার সকল মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

জানা যায়, আহমদুল কবির ছিলেন ব্রিটিশ- পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবাদিকতা অঙ্গনের এক প্রতিভাদীপ্ত ব্যক্তিত্ব। আপসহীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য পাকিস্তান আমল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি ছিলেন একজন ভিন্নমাত্রার রাজনীতিক। মূলত তার রাজনৈতিক দর্শন ছিল এদেশের সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করা। তদানীন্তন পাকিস্তানের রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক- গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল যে ধারা এদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিপুল জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক চেতনাকে নাড়া দিয়েছিল- সেই ধারার পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন আহমদুল কবির।

স্বাধীন বাংলাদেশে প্রগতিশীল- গণতান্ত্রিক- সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী রাজনীতির নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন আহমদুল কবির। দেশের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন আদর্শবান এবং নীতিনিষ্ঠ এক নেতা হিসেবে। তিনি সত্তরের দশকে গণতন্ত্রী পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুকালে তিনি পার্টির সভাপতি ছিলেন।

আহমদুল কবির ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর প্রথম ভিপি। ১৯৬৫ সালে আহমদুল কবির ন্যাপের প্রার্থী হিসেবে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন। সংবাদপত্রকে তিনি তার রাজনৈতিক আদর্শ প্রচার ও স্বকীয় প্রতিভা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেন। সাংবাদিকতায় তার অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল এবং বস্তুনিষ্ঠ চেতনার প্রতিরূপ হলো দৈনিক ‘সংবাদ’।

দৈনিক সংবাদে বস্তুনিষ্ঠ খবর ও মতামত প্রকাশের মধ্য দিয়ে তিনি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। আমৃত্যু তিনি এই আদর্শ লালন করে গেছেন। কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়নের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতির পদও অলঙ্কৃত করেছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। আহমদুল কবির দেশের একজন বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তাও ছিলেন। এদেশের শিল্প-বাণিজ্য প্রসারে তার ব্যাপক অবদান রয়েছে।
আহমদুল কবিরের -মনু মিয়া- বাবা মরহুম আবু ইউসুফ লুৎফুল কবির ছিলেন ঘোড়াশালের জমিদার। মায়ের নাম মরহুমা সুফিয়া খাতুন। তার জন্ম ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯২৩ ঘোড়াশালে। তিনি ২০০৩ সালের ২৪ নভেম্বর কলকাতার এপোলো গ্লেনইগল হাসপাতালে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে মারা যান।
অর্থনীতিতে সম্মানসহ বিএ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ১৯৪৫-৪৬ সালে ডাকসুর প্রথম সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও ১৯৪২-৪৩ সালে তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৫ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রার্থী হিসেবে তিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে নরসিংদী-২ -পলাশ-শিবপুর- নির্বাচনী এলাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৮৬ সালে নরসিংদী-২ -পলাশ- নির্বাচনী এলাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। আহমদুল কবির অর্থনীতিতে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করার পর রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ায় যোগদান করেন এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫০ সালে তিনি পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন এবং ১৯৫১ সালে গ্যাটে সম্মেলনে যোগদান করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি নিজের ব্যবসায় যোগদান করেন।

আহমদুল কবির তদানীন্তন পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি কৃষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। আশির দশকে তার নেতৃত্বে গণতন্ত্রী পার্টি গঠিত হয় এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি ছিলেন।
১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করেন। রোমে ফাও-এর কনফারেন্সে প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন। ইইসি দেশগুলোতে তিনি বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সরকার ‘সংবাদ’ অফিস পুড়িয়ে দেয় এবং আহমদুল কবিরকে গ্রেফতার করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ‘সংবাদ’ প্রকাশের জন্য অনেক প্রলোভন দেখায়, কিন্তু আহমদুল কবির পত্রিকা প্রকাশ করেননি। স্বাধীনতার পরপরই তিনি জেল থেকে মুক্তি লাভ করেন এবং সংবাদ পুনঃপ্রকাশ করেন।

আহমদুল কবির ১৯৫৪ সালে সংবাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে তিনি সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০১ সালে প্রধান সম্পাদক হন এবং আমৃত্যু এ দায়িত্ব পালন করে গেছেন। আহমদুল কবির স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে ও অসংখ্য আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও রাজনৈতিক অনুসারী রেখে গেছেন।