
মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ
দারুল ইহসান ট্রাস্ট” ১৯৮৬ সালে সাভার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিক্ষাবিদ এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আলী আশরাফ কর্তৃক তাঁর নিজ সম্পত্তির আট একর একষট্টি শতাংশ জমি প্রদানের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। উক্ত সময়ে রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ এন্ড ফামর্স দ্বারা “Trust Deed” রেজিস্ট্রেশনের কোন বিধান ছিল না। উক্ত ট্রাস্টে “Founder trustees” এর সংখ্যা ছিল মোট ০৬ (ছয়) জন যার মধ্যে ঐ ট্রাস্টের একমাত্র “Settler” ছিলেন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আলী আশরাফ। কারণ, তিনি তাঁর সারা জীবনের সমস্ত রোজগারের অর্থ দিয়ে ট্রাস্টে ৮.৬১ একর জমিসহ মোট প্রায় ৩৯ (উনচল্লিশ) বিঘা জায়গা/জমি কিনে দান করেন। দারুল ইহসান ট্রাস্ট এর অধীনে তিনি ১৯৯২ সালের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন মোতাবেক ১৯৯৩ সালে “দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়” নামে এদেশের প্রথম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন, যা সরকারের অনুমোদন লাভ করে। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. সৈয়দ আলী আশরাফ বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ১৯৯৮ সালে অধ্যাপক ড. সৈয়দ আলী আশরাফ ইন্তেকাল করেন। এরপর তাঁর অগ্রজ জাতীয় অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান দারুল ইহসান ট্রাস্ট ও দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনিও ২০০২ সালে ইন্তেকাল করেন। এরপর অধ্যাপক ড. এম, এ হামিদ ও অধ্যাপক মনিরুল হক যথারীতি মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জনাব মারুফ হোসেন (মুকুল) ২০০৫ সালে “দারুল ইহসান” ট্রাস্টের সদস্য পদ লাভ করেন (এবং তিনি অদ্যাবধি দারুল ইহসান ট্রাস্টের ম্যানেজিং ট্রাস্টি)। সৈয়দ আলী নকী এবং ফয়জুল কবীর কর্তৃক চাতুর্য্যপূর্ণভাবে রেজিস্ট্রিকৃত “দারুল ইহসান ট্রাস্ট”-এ একপর্যায়ে ট্রাস্টের ২৬ জন ট্রাস্টির বিরোধের প্রেক্ষিতে মহামান্য উচ্চ আদালতের বিভিন্ন বেঞ্চে পরস্পরবিরোধী মোট ১৩টি “Writ Petitions” মামলা দায়ের হয়, পরবর্তীতে এক বেঞ্চে এনে দীর্ঘ শুনানি শেষে বিগত ১৩/০৪/২০১৬ ইং তারিখে রায় ঘোষণা হয়। রায়ে মহামান্য হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে ধানমন্ডি গ্রুপ ও সাভার গ্রুপকে আইনগতভাবে দারুল ইহসান ট্রাস্টের বৈধ গ্রুপ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। সেই সাথে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার নির্দেশনা প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২৫/০৭/২০১৬ইং তারিখে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করে, যার স্মারক নং-৩৭.০.০০০০.০৭৮.৩১.০০৪.১৪-৪০৯। উক্ত জারিকৃত পরিপত্র মোতাবেক ২০১৬ সাল থেকে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়, যা এখনও পর্যন্ত বলবৎ আছে। মাননীয় হাইকোর্ট অপ্রয়োজনীয় “Writ Petitions” রুজু এর মাধ্যমে আদালতের সময় অপচয়সহ অন্যান্য কারণে সাভার গ্রুপ অর্থাৎ আলী নকী গ্রুপের উক্ত ফয়জুল কবীরসহ মোট ০৪ (চার) জনকে পৃথক পৃথকভাবে ১০ (দশ) লক্ষ টাকা করে জরিমানা করেন। যা তাদেরকে নিজ উৎস থেকে ব্যক্তিগতভাবে ট্রেজারী কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য আদেশ দান করেন। অপরপক্ষে ফয়জুল কবীর নিজেকে “দারুল ইহসান” ট্রাস্টের চেয়ারম্যান দাবি করে নানা মহলে বিভ্রান্তি ও অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যার সহযোগী
হিসেবে কাজ করছেন দারুল ইহসান ট্রাস্টের সচিব দাবিদার ওসমান গনী। এছাড়া তারা তাদের উপর আদালত কর্তৃক অর্পিত জরিমানা অদ্যাবধি পরিশোধ করেনি। প্রকাশ থাকে যে বিগত ২২/০১/২০২৫ ইং তারিখে সাভার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ে “দারুল ইহসান ট্রাস্ট”
এর মূল ঠিকানা (Head Office) পরিবর্তন ও জমি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানীর দিন ধার্য থাকায় জনাব মারুফ হোসেন মুকুলসহ ট্রাস্টের কতিপয় কর্মকর্তা ও আইনজীবী উক্ত কার্যালয়ে হাজিরা দেন এবং বাদী হিসেবে মারুফ হোসেন মুকুল শুনানীতে অংশগ্রহণ করেন। শুনানী শেষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় থেকে নিচে নেমে আসার সময় ফয়জুল কবীর ও ওসমান গনীর নেপথ্য ইঙ্গিতে আশুলিয়া থানার সাদা পোশাকে থাকা ডিবির এসআই ইদ্রিস ও অন্য একজন এসআই এবং দুইজন কন্সটেবল (পোশাক পরিহিত ও অস্ত্রধারী) বিনা ওয়ারেন্টে এবং অন্য থানা থেকে প্রাপ্ত কোন Requistion ব্যতিরেকে আনুমানিক বেলা ১১:৪৫ ঘটিকায় মারুফ হোসেন মুকুলকে গ্রেপ্তার করে আশুলিয়া থানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাঁকে সন্ধ্যায় উত্তরা পশ্চিম থানায় হস্তান্তর করে এবং পরের দিন অর্থাৎ ২৩/০১/২০২৫ইং তারিখে তাঁকে সিএমএম আদালতে চালান দেওয়া হয়। পরবর্তীতে জানা যায় যে মারুফ হোসেন মুকুলকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে উত্তরা থানায় ১৮নং মামলা তাং ০৯/১২/২০২৪ইং জড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইত্যবসরে উক্ত মামলার বাদী বাদল খলিফা আদালতের এফিডেভিটের মাধ্যমে জানিয়েছেন, তিনি মারুফ হোসেনকে মামলায় বিবৃত কোন অপরাধ করতে দেখেননি। উক্ত মামলায় সম্পূণ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জনাব মারুফ হোসেন মুকুলকে পতিত আওয়ামী শাসনামলের মন্ত্রী নানকের সহযোগী
ও ধানমন্ডি থানা আওয়ামী লীগের সহ: সম্পাদক হিসেবে দেখানোর অপচেষ্টা করা হয়েছে। মারুফ হোসেন মুকুল বিএনপির একজন সক্রিয় সমর্থক এবং তিনি কখনও আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন না। এ ব্যাপরে প্রকৃত সত্য হলো, দারুল ইহসান ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয় ধানমন্ডির বাড়ী নং ২১, রোড নং ৯/এ ঢাকা নানক জোরপূর্বক দখলের চেষ্টায় ছিলেন। ২০২০ সালে নানক ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয় ভবনের একাংশ দখল করে নেয় এবং সেখানে তার মেয়ের জন্য একটি অফিস তৈরী করে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবে স্বৈরাচার পতনের ফলে ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয় ভবনটি দখলমুক্ত হয়। এমতাবস্থায়, উক্ত ফয়জুল কবীর ও তার সহযোগী ওসমান গনীর সমস্ত অপতৎপরতা, “দারুল ইহসান ট্রাস্ট” এর
চেয়ারম্যানের মিথ্যা পরিচয়ে বিভিন্ন মহলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি এবং নানাবিধ মামলা মোকদ্দমার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া একান্ত কাম্য এবং এর দ্বারা তার আইনানুগ শাস্তি আমরা দাবি করছি।