তিতাস -কুমিল্লা- প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে অবৈধভাবে এলপিজি গ্যাস বোতলজাতকরণের দায়ে ৩ জনকে সাজা প্রদান করা হয়েছে।গতকাল শনিবার দাউদকান্দি উপজেলার গোয়ালমারী ইউনিয়নের ঢুলী নছরুদ্দী এলাকায় ঢালি হাউজে অবৈধভাবে এলপিজি গ্যাসের বোতলজাতকরণ ও বিভিন্ন কোম্পানির নামে অনুমতিহীনভাবে লেভেলিং করে গ্যাস সিলিন্ডার তৈরি ও বিপণনের বিরুদ্ধে ফায়ার সার্ভিস ও দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশের একটি টিম সহযোগে দাউদকান্দি উপজেলার সহকারী কমিশনার -ভূমি- ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো: জিয়াউর রহমান-এর নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে দেখা যায়- নেওয়াজ নামক এক কোম্পানির গ্যাসের বোতল থেকে একটি মটর যন্ত্রের মাধ্যমে অধিক মুনাফার আশায় বসুন্ধরা- ফ্রেশ- যমুনা- ওমেরা- ডেলটা প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের লোগোসমৃদ্ধ সিলিন্ডার বোতলে অবৈধভাবে ও অনুমতিহীনভাবে গ্যাস ট্রান্সফার করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন গ্রাহকদের সাথে প্রতিশ্রুত পণ্য না দেওয়ার প্রতারণা করা হচ্ছে; অন্যদিকে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ হয়ে বিস্ফোরণ অর্থাৎ গ্রাহকের জীবন বিপন্ন হবার মতো ঘটনা ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এভাবে অবৈধ ও অনিরাপদচাবে উন্মুক্ত গ্যাস ট্রান্সমিশনের ফলে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ এর মারাত্মক আশংকা তৈরি হচ্ছে মর্মে অভিযানকালে উপস্থিত ফায়ার সার্ভিসের সদস্যগণ জানান। দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার এরশাদ হোসাইন জানান- এখান শতশত সিলিন্ডারের মধ্যে একটির বিস্ফোরণ হলেই বিশাল অগ্নিসংযোগ সংঘটিত হবার ঝুঁকি রয়েছে এবং এতে এ বাড়ি ও তার আশেপাশের এলাকায় ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে। অধিকন্তু, এ সিলিন্ডার ব্যবহারকারী বসতবাড়িতেও অগ্নিসংযোগ ঘটার আশংকা থাকবে কেননা সিলিন্ডার প্যাকেজিং ও লেভেলিং-এ ন্যুনতম নিরাপত্তা রক্ষা করা হচ্ছে না। এ ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ০৩ -তিন- জনকে এ সময়ে হাতেনাতে আটক করা হলে তারা প্রত্যেকেই দোষ স্বীকার করেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ সময় ১. ফেরদৌসী, পিতা: অলি উল্লাহ- গ্রাম: ঢুলি নছরুদ্দি- দাউদকান্দি- কুমিল্লা। ২. আ: হাকিম, পিতা: মো: শাহজাহান- গ্রাম: ঢুলি নছরুদ্দি, দাউদকান্দি, কুমিল্লা। ৩. হাবিব হাসান- পিতা: আ: মমিন, গ্রাম: ঢুলি নছরুদ্দি- দাউদকান্দি, কুমিল্লা নামক তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয় এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ প্রয়োগ করে সেবাগ্রহীতার জীবন হানিকর এ কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকার জন্য প্রত্যেককে ০১-এক- মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। সরেজমিনে জানা যায়, অভিযুক্ত ফেরদৌসীর স্বামী আব্দুস সালাম বাইরে থেকে এ ব্যবসায়ের মালামাল যোগান এবং অন্যান্য সিন্ডিকেটের সাথে যোগাযোগ রাখেন৷ অপরদিকে তার স্ত্রী ফেরদৌসী ভেতরে অন্যান্য কর্মচারীদের সাথে নিয়ে এ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বেও এখানে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে এখানে অভিযান চালিয়ে ২ -দুই- লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করাসহ অভিযুক্ত ব্যক্তি ও কর্মরত শ্রমিকদের থেকে ভবিষ্যতে এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ আর করবে না মর্মে মুচলেকা নেওয়া হয়েছিল। তথাপিও তারা তাদের কাজ থামান নি; বরং আগের চেয়ে আরো ব্যাপকভাবে এ কাজ চলছিল মর্মে সরেজমিনে দেখা যায়।
এ অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ সার্বিক সহযোগিতা করেন দাউদকান্দি মডেল থানা এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর- দাউদকান্দির দুটি দল।