
তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার তিতাসে যৌতুকলোভী পাষন্ড
স্বামীর দাবিকৃত দুই লাখ টাকা না পেয়ে দেড় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।ঘটনাটি ঘটেছে গত রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামের প্রবাসী সাদেক সরকারের বাড়িতে।
খাদিজা আক্তার দাউদকান্দি উপজেলার ভিটিশ্বর ইউনিয়নের মাদলা গ্রামের শহিদুল্লাহর মেয়ে।
এ ঘটনায় খাদিজার বাবা শহিদুল্লাহ বাদী হয়ে তিতাস থানায় ছয়জনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভিকটিমের বাবা শহিদুল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, ৪বছর পূর্বে সামাজিকভাবে তার কন্যা খাদিজা আক্তারকে তিতাস উপজেলার মৌটুপী গ্রামের প্রবাসী সাদেক সরকারের পুত্র নাঈমের সাথে বিয়ে দেই। তিন লাখ টাকা যৌতুক দিয়ে আমার মেয়েকে বিয়ে দেই পাষন্ড নাঈমের কাছে। তারপর বিদেশের নাম করে আরও নগদ তিন লাখ টাকা নেয় তারা।
পরবর্তীতে বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় খাদিজাকে যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল নাঈম ও তার মা।এবারও তাদের চাহিদা মত দুই লাখ টাকা না পেয়ে সে আমার মেয়ের এ অবস্থা করেছে।
আহত অন্তঃসত্ত্বা খাদিজা আক্তার জানান, আমার জুয়াড়ী স্বামী নাঈম সরকার ও তার মা আমাকে বাবার বাড়ি থেকে দু লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। আমার পরিবারের পক্ষ থেকে অপারগতা জানালেও বেশ কয়েকদিন ধরে আমার স্বামী ও শ্বাশুড়ি আমাকে খুব চাপ সৃষ্টি করে আসছিল।
এনিয়ে আমার স্বামী গতকাল বিকাল থেকে আমাকে মারতে শুরু করে বিষয়টি আমি আমার শ্বাশুড়িকে জানালে তিনি তাতে কর্নপাত না করে বাড়ি থেকে চলে যায়।আমি আমার শ্বাশুড়িকে বারবার অনুরোধ করেছিলাম আমাকে একা রেখে চলে গেলে স্বামী আমাকে জানে মেরে ফেলবে। তারপরও তিনি চলে যায়। তারপর আমার স্বামী আমাকে ঘরে একা পেয়ে প্রথমে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত যখম করে। আমি তার হাতে পায়ে ধরলেও তার মনে একটূও দয়া হয়নি, তারপর সে পাকঘর থেকে লোহার মাছ উল্টানি নিয়ে চুলায় গরম করে আমার দু চোখে ঢুকিয়ে দিতে গেলে আমি আমার দু হাত দিয়ে চোখ ঢেকে ফেলি। তারপর সে আমার হাতে, পায়ে, পিঠে, রানে গরম মাছ উল্টানির ছেকা দেয়, এতে করে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানের মাংস উঠে গিয়ে প্রচন্ড রক্তপাত হয়। এক পর্যায়ে আমি আমার জীবন ভিক্ষা চেয়ে তার কাছ থেকে ছাড়া পেলেও সে আমাকে হাসপাতালে পাঠাতে রাজি হয়নি, তারপর এক সিএনজি চালক আমাকে তুলে নিয়ে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্তের বাড়িতে গিয়ে কাউকে খোঁজে পাওয়া যায়নি। ঘরের দরজাও তালাবদ্ধ ছিল।
তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা.শাহিক আহাম্মেদ জানান, ভিকটিমকে অমানবিক ও পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে।তার শরীরের অনেক যায়গায় কঠিন আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এবং তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তপাত হয়েছে। এতে তার পেটের বাচ্চাটাও খতিগ্রস্ত হতে পারে।
এ বিষয়ে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, আমরা অভিযোগ নিয়েছি ,তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।