মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ
সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টার।।
ঢাকা জেলার আশুলিয়া এলাকার চাঞ্চল্যকর শ্রমিক মেজবাহুল -১৭- হত্যাকান্ডের মূলহোতা ইয়াসিন -২২- সহ ০৩জন’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
র্যাব সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন- চাঁদাবাজি- চুরি- ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জোরালো তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। গত ৩১ জুলাই ২০২৪ তারিখ সকালে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন বাড়ইপাড়া নবীনগর টু চন্দ্রা মহাসড়কের রাস্তার পূর্ব পাশে কাঠ বাগানের ভিতর একটি অজ্ঞাতনামা গলাকাটা মৃতদেহ পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ২৩ আগস্ট ২০২৪ তারিখে ঢাকা জেলার আশুলিয়ার বাইপাইল নামাবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর শ্রমিক মেজবাহুল -১৭- হত্যাকান্ডের মুলহোতাসহ নিম্নোক্ত ০৩ সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়:
-ক- মোঃ ইয়াসিন আরাফাত -২২- জেলা-জয়পুরহাট।
-খ- তামিম আকন -১৮- জেলা-বরগুনা।
-গ- মুন্না মুন্সি -১৯- জেলা-ফরিদপুর।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে- গত ৩০ জুলাই ২০২৪ তারিখ বিকালে গ্রেফতারকৃত আসামীরা নিহত ভিকটিম মেজবাহুল -১৭- কে নিজ বাসা হতে ডেকে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিম বাসায় ফিরে না আসলে ভিকটিমের পিতা ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে গ্রেফতারকৃত আসামীরা মুক্তিপণ হিসেবে নগদ ২৪,০০০ – টাকা দাবী করে ফোনটি বন্ধ করে দেয়। ভিকটিমের পিতা ভিকটিমকে খুঁজে না পেয়ে গ্রেফতারকৃত আসামী রবিউলের বাসায় গিয়ে ভিকটিম মেজবাহুল এর বিষয়ে জানতে চাইলে সে কিছু জানেনা বলে বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যায়।
গত ১৯ আগস্ট ২০২৪ তারিখ ভিকটিমের পরিবার জানতে পারে যে- গ্রেফতারকৃত আসামীরা ভিকটিম মেজবাহুল কে গলা কেটে হত্যা করে আশুলিয়া থানাধীন বাড়ইপাড়াস্থ কাঠ বাগানের ভিতর লাশটি ফেলে দেয়। এ বিষয়ে ভিকটিমের পরিবার আশুলিয়া থানায় যোগাযোগ করলে আশুলিয়া থানা পুলিশ জানায় যে- গত ৩১ জুলাই ২০২৪ তারিখে উল্লেখিত স্থানে একটি অজ্ঞাতনামা গলাকাটা মৃতদেহ পাওয়া যায় এবং টাঙ্গাইল নিবাসী জনৈক ব্যাক্তি লাশটি তার নিখোঁজ ছেলের বলে দাবি করায় তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। ভিকটিমের পরিবার ও আশুলিয়া থানা পুলিশ উক্ত লাশের বিষয়ে টাঙ্গাইল নিবাসী জনৈক ব্যাক্তির সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারে যে, লাশটি তার ছেলের নয়- তার ছেলে সুস্থ্য অবস্থায় নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছে। পরবর্তীতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লাশটি টাঙ্গাইল হতে ভিকটিমের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয় এবং ভিকটিমের পরিবার উক্ত ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে- গ্রেফতারকৃত আসামীরা সকলেই একই এলাকার বাসিন্দা এবং চাকুরীর সুবাদে তাদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। আসামীরা উক্ত এলাকায় বসবাসরত ভিকটিম মেজবাহুল-কে হত্যার ভয় দেখিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী আসামীরা গত ৩০ জুলাই ২০২৪ তারিখ বিকালে ভিকটিম মেজবাহুল -১৭- কে বেড়ানোর কথা বলে নিজ বাসা হতে ডেকে নিয়ে তার ফোন হতে ভিকটিমের পরিবারের নিকট মুক্তিপন দাবি করে। মুক্তিপনের টাকা না পাওয়ায় তারা ভিকটিমকে ধারালো চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।