জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি।।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মাগুরা নদী পারাপার নিয়ে অনাকাঙ্খিত বিড়ম্বনায় পড়েছেন যাত্রীরা। নদীতে খেয়া নৌকা থাকলেও মাঝি নেই। মাঝি না থাকায় বাধ্য হয়ে যাত্রীরা নিজেই নৌকা বেয়ে এপার-ওপার হচ্ছেন।
১৮ মার্চ শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, নদীতে খেয়া নৌকা ভেসে ভেসে ঘুরছে। নদীর দুই পারে পারাপারের জন্য অপেক্ষা করছেন নারী-পুরুষ যাত্রীরা। নৌকাটি পশ্চিমপারের ঘাটে আছে। নৌকাতে কয়েকজন নারী ও শিশু যাত্রী উঠে বসে অপেক্ষায় আছেন পুরুষ কোন যাত্রী এসে নৌকা বেয়ে ওপারে নিয়ে যাওয়ার আশায়। অনেক্ষণ পর এ প্রতিবেদক সহ আরো ২ জন তরুণ এসে নৌকায় উঠলে তাদের দেহে যেন প্রাণ ফিরে আসে। এবার সমস্যা হলো যাদের উপর নারী যাত্রীরা এতো ভরসা করলেন, সেই পুরুষ যাত্রীদের মধ্যে কেউই ভালো ভাবে নৌকা বাইতে জানেন না। তার উপর নদীভর্তি কচুরিপানা। এতো কচুরিপানা মাড়িয়ে নৌকা বেয়ে পশ্চিমপার থেকে পূর্ব নেয়ার কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার দায়িত্ব পড়েছে সেই পুরুষ যাত্রীদের ঘাঁড়ে। এর মধ্যে পূর্বপারের যাত্রীরা ঘাটে বসে অপেক্ষা করছেন কতক্ষণে এপারের নৌকা ওপারে যাবে। অবশেষে দীর্ঘ প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট এলোপাতারি ভাবে নৌকা বেয়ে ওপারে গিয়ে পৌঁছালো নৌকাটি। এ যেন এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। নিজ চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবেন না।
এ সময় স্থানীয় যাত্রীদের মধ্যে অনেকে জানান, এ খেয়া নৌকাটি গ্রামবাসীর অর্থে বানানো হয়েছে। নৌকা চালানোর জন্য ২ জন মাঝি ছিল। তাদেরকে প্রতি মাসে গ্রামবাসীরা ২৫ হাজার টাকা দিতেন। এখন মাঝিরা ৪০ হাজার টাকা চায়। তাদের কথা মতো টাকা না দেয়ায় মাঝিরা চলে গেছে। যে কারণে আজ থেকে এ দুর্গতি চলছে।
জানাগেছে, নদীর পশ্চিমপারে রয়েছে শিবগঞ্জ বাজার এলাকা ও পূর্বপারে রয়েছে উলুকান্দি, কিশোরপুর ও খালিশাপাড়া গ্রাম। মধ্যস্থানে আছে মাগুরা নদী। নদীটি বেশি গভীর হওয়ায় যুগযুগ ধরে নৌকাযোগে এসব গ্রামের মানুষ সহ আশপাশের নারী-পুরুষ, শিশু, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় পড়–য়া শিক্ষার্থী সহ প্রতিদিন শতশত মানুষ চলাচল করছেন। নৌকাই তাদের একমাত্র ভরসা। মাঝে মধ্যে নৌকা না থাকলে অথবা মাঝি না থাকলে বেড়ে যায় তাদের অবর্ণনীয় ভোগান্তি। রাত ১০ টার পর তো নৌকাই থাকে না। কোন অবস্থাতেই এপারের মানুষ ওপারে যাতায়াত করতে পারেন না। এ অবহেলিত জনপদের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন কবে হবে, কেউ জানেন না।
মাওলানা দবিরুল ইসলাম সহ স্থানীয় অনেকে বলেন, এ মাগুরা নদীতে একটি সেতুর অভাবে আমরা এ অঞ্চলের মানুষ যুগযুগ ধরে পিছিয়ে আছি। ভোগান্তি যেন পিছু ছাড়তে চায় না। জনস্বার্থে এখানে সেতু হওয়া অতীব জরুরী। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, সেতুর দাবিতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন-নিবেদন করলেও কোন কাজ হয়নি। এখন আমরা নিরাশ হয়ে পড়েছি। এ বিষয়ে জানতে বারবার চেষ্টা করেও জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সোহরাব হোসেনের মন্তব্য পাওয়া যায়নি