জনি আহমেদ, চুয়াডাঙ্গা।।
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হাসাদহ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রকি মন্ডল ও এএসআই শাহাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ নিয়ে আসামি ছেড়ে দেয়ার অভিযোগে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। শুক্রবার (১ অক্টোবর) তাদের দুইজনকে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, জেলার জীবননগর থানাধীন হাসাদহ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাব-ইন্সপেক্টর(এসআই) রকি মন্ডল ও এএসআই সাহাজুল ইসলাম গত বুধবার রাতে হাসাদহ গ্রামের শাকুব আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম, নুরুল মোল্লার ছেলে সজল, ইউনুসের ছেলে শফি ও চান্দুর ছেলে রানা নামের চার যুবকের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ তুলে হাসাদহ গ্রামের হুগলা কুড়ো বিলের ধার থেকে গত বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আটক করেন এএসআই সাহাজুল। আটককৃতদেরকে হাসাদহ পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে পরিবারের সাথে আর্থিক লেনদেনের একপর্যায়ে ২০ হাজার টাকা নিয়ে রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ওই চার যুবকসহ তাদের সাথে থাকা আরও দুইজনকে ছেড়ে দেয়। আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে একপর্যায়ে আটককৃত যুবকদের নিকট থেকে নেয়া ২০ হাজার টাকা গত বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগীদের বাড়িতে গিয়ে ফেরত দেয়। ঘটনাটি পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ জানতে পারায় তাদের দু’জনকেই গতকাল শুক্রবার সকালে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনে ক্লোজ করেন।
তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, আটককৃত চার যুবকের সাথে গাইবান্ধা থেকে সজলের দুই বন্ধু ছিল তাদেরকেউ আটক করে পুলিশ। আটককৃত ৬ জনকে ছেড়ে দেয়ার জন্য এএসআই সাহাজুল আটককৃত আসামি সজলের বড় ভাই সাগরের নিকট একলক্ষ টাকা দাবি করেন। দেনদরবারের এক পর্যায়ে ২০হাজার টাকায় রফা হয়।
এ বিষয়ে সাগরের সাথে কথা বললে তিনি আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং বলেন, আমাদের উভয়পক্ষের মধ্যে মীমাংসা হয়ে গেছে এ বিষয় নিয়ে আমি আর নতুন করে কোন কথা বলবো না ।
হাসাদহ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই রকি মন্ডলের সাথে মুটোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোনটি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
হাসাদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বিশ্বাসের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, হাসাদহ পুলিশ ক্যাম্পটি আমার ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত। আইসি এবং টু আইসি ক্লোজের বিষয়টি আমি জানি না। আমার মায়ের মৃত্যুর কারণে বেশ কয়দিন ইউনিয়ন পরিষদে যায়নি।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল খালেক বলেন, সাব-ইন্সপেক্টর রকি মন্ডল ও এএসআই সাহাজুল ইসলামকে পুলিশ লাইনে নেয়া হয়েছে। তবে এখনও আমরা কোন কাগজ হাতে পাইনি।
চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা-জীবননগর সার্কেল) মুন্না বিশ^াস জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। সেসময় ওসি জীবননগর এর সাথে কথা বলার জন্যও বলেন তিনি।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, হাসাদহ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রকি মন্ডল ও এএসআই সাহাজুল ইসলাম পেশাদারীর ট্রেনিং করে অপেশাদার কাজ করায় পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।