মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ
সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টার ।।
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের -ঢাবি- সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কোটা বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার -২ জুলাই- বিকেল চারটায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে নীলক্ষেত সায়েন্সল্যাব হয়ে শাহবাগে এসে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। সারা বাংলায় খবর দে- কোটা প্রথার কবর দে এমন স্লোগান দিয়ে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ করছেন কয়েক শ শিক্ষার্থী।
দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ- মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। সেখানে বলা হয়েছিল- ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওইসব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা বাতিল করা হলো।
এ পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। এর প্রেক্ষিতে গত ৫ জুন ২০১৮ সালের জারিকৃত পরিপত্রটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
এরপর থেকেই সারাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফুঁসে ওঠেন। কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে নানা স্থানে বিক্ষোভ করেন কোটাবিরোধীরা। ঢাবি ছাড়াও বিক্ষোভ হয় জাবি- জবি- রাবি- সাত কলেজসহ দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন কলেজে।
কোটা বাতিলের দাবিতে গতকালও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচির পর আজ আবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্যাপক শোডাউন করেন তারা।
দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি পদযাত্রা শুরু হয়ে নীলক্ষেত-নিউমার্কেট, সাইন্সল্যাব হয়ে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা।
এর আগে হলে হলে গিয়ে আন্দোলনের পক্ষে জনসমর্থন আদায় করেন শিক্ষার্থীরা। হ্যান্ডমাইক নিয়ে হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। ‘হলে হলে খবর দে- কোটা প্রথার কবর দেসহ নানা স্লোগান দেন তারা।
শাহবাগ অবরোধের সময় গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক সমাজ সেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন- প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ এই কোটা পদ্ধতি সাধারণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতি একটি অবিচার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বাতিল হওয়ার পর গত ৫ জুন সেই কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এর মাধ্যমে মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হোক।