
কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি।।
কক্সবাজারের উখিয়ায় লুলু আল মারজান (৪৫) নামের এক নারীনেত্রীকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ মে) রাত সাড়ে আটটার দিকে উখিয়া উপজেলার পালংখালি ইউনিয়নে মারজানের নিজ বাড়িতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত ঘাতকের বসতবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
নিহত লুলু আল মারজান উখিয়া উপজেলার পালংখালি ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মৃত মোহাম্মদ আলমগীরের মেয়ে। তিনি পালংখালি উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধি। এছাড়া তিনি ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসন ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড থেকে বিগত দুটি ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
নিহত মারজানের মেয়ে রাহমিনা মমতাজ জানান- তাদের নিকটাত্মীয় ও সদ্য জেলফেরত মুহাম্মদ ইউসুফ বৃহস্পতিবার এশার নামাজের পর বাড়িতে অতর্কিত প্রবেশ করে তার মাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এসময় তার দুই বোন ও এক ভাগ্নেকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে ইউসুফ।
পালংখালি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নুরুল হক জানান, জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মারজান ও ইউসুফের পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। ২৪ বছর আগে একইভাবে
মারজানের পিতা আলমগির মেম্বারকে ইউসুফের পরিবার হত্যা করেছিলো।
জানা যায়, হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত মুহাম্মদ ইউসুফ ও নিহত লুলু আল মারজান সম্পর্কে চাচাতো ভাইবোন। পারিবারিক সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে তীব্র বিরোধ চলে আসছে। এটিকে কেন্দ্র করে বিগত ১৯৯৯ সালে ইউসুফের পিতা জাহাঙ্গির আলমের হাতে খুন হন মারজানের পিতা ও তৎকালীন ইউপি সদস্য মুহাম্মদ আলমগির।
জানা গেছে, মুহাম্মদ ইউসুফ চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি র্যাবের অভিযানে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলো। মাত্র দুইদিন আগে জামিনে বেরিয়ে এসে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
উখিয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলি বলেন- ‘নিহত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে’।
এদিকে, নারীনেত্রী লুলু আল মারজানকে কুপিয়ে হত্যাকান্ডের পর স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত ইউসুফের বাড়িতে আগুন দেয়। পরে উখিয়া সদর থেকে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।