পাবনা প্রতিনিধি।।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পাবনার সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক দুই মেয়র মিরাজুল ইসলাম ও মাহবুবুল আলম বাচ্চুসহ ১৯ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন -দুদক-।
প্রাথমিক তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মেলায় বুধবার -১৮ সেপ্টেম্বর- দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-পাবনায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
দুদক পাবনা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মনোয়ার হোসেন বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নম্বর ২৭। মামলায় মোট ৪৩ লাখ ৭ হাজার ৫৩৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার অভিযুক্ত মধ্যে ২ জন সাবেক মেয়র- ১১ জন সাবেক কাউন্সিলর- আর বাকি ৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
অভিযুক্তরা হলেন- সাবেক মেয়র মিরাজুল ইসলাম প্রামানিক -৫৮- সাবেক মেয়র মাহবুবুল আলম বাচ্চু -৪৮- সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেন খান -৫৪- বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী শাহীনুজ্জামান -৫৩-
হিসাবরক্ষক আব্দুল বারিক -৪৯- কার্য-সহকারী আবু ইছা শফিউল আলম -৪৭- প্রধান সহকারী নুরুজ্জামান -৪৩- এম.এল.এস.এস নুরুল ইসলাম -৪৬-।
কাউন্সিলরদের মধ্যে অভিযুক্তরা হলেন- মধ্যে ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর চাঁদ আলী -৫২- ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলাউদ্দীন -৩৩-একই ওয়ার্ডের দুই সাবেক কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম -৪৪-ও আব্দুল হাই -৬৫-৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফছার আলী -৬৮-
৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তোছাদ্দেক হোসেন নাসিম -৪৩- ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হামিদ ব্যাপারী -৬৬- একই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল লতিফ -৬২-, ১,২,৩ নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত কাউন্সিলর বুলবুলি খাতুন -৫৫- ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত কাউন্সিলর হাসিনা খাতুন -৪৭-এবং ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত কাউন্সিলর জীবন নাহার -৬০-।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সাঁথিয়া পৌরসভার অনুকূলে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ডেঙ্গু মশক নিধন-পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও প্রচার, কোভিড-১৯ করোনা মহামারি মোকাবেলার লক্ষ্যে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৪০০ টাকা,
২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত ১১ লাখ ৩ হাজার ৮৬৭ টাকা এবং ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত ১১ লাখ ২৫ হাজার ১৫০ টাকা অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া বিল-ভাউচার ও কোটেশন তৈরি করে আত্মসাত করেছেন।
এছাড়াও অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশের মাধ্যমে সাঁথিয়া পৌরসভার কোন জীপ গাড়ী না থাকা সত্ত্বেও ব্যক্তিগত গাড়ীতে জ্বালানি ব্যয়ের জন্য বিল তুলে মোট ২ লাখ ১৫ হাজার ৯৬৬ টাকা এবং সাঁথিয়া পৌরসভার ড্রেন পরিষ্কারের নামে ভুয়া বিল ভাউচার প্রস্তুত করে ২ লাখ ৭২ হাজার ১৫০ টাকা আত্মসাত করেছেন।
সবমিলিয়ে তারা ৪৩ লাখ ৭ হাজার ৫৩৩ টাকা পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া বিল-ভাউচার ও কোটেশন সৃজন করে বিল তুলে আত্মসাত করেছেন। যা দন্ডবিধির
৪০৯-৪৬৭-৪৬৮-৪৭১-১০৯ ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫-২-ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দুদক পাবনা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেন- তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পরবর্তীতে দুদকের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।